এবারের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভ জরুরি কেন

এবারের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভ জরুরি কেন

পরিতোষ হালদার:

কথায় আছে- লীগ- নৌকা -- খেজুর গুড় ॥ এই তিনে মুকসুদপুর।আগামী নির্বাচনে গোপালগঞ্জ ১ ( মুকসুদপুর- কাশিয়ানি) আসনে অবশ্যই আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করবে এটা ঠিক, কারণ এই এলাকার ভোটাররা ৯০ ভাগেরও বেশি নৌকায় ভোট দিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে ২০২৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভ জরুরি নাকি বিএনপির ? কোন দলের হাত ধরে অ২ এর পাতায় দেখুন  এগিয়ে যাবে বা পিছিয়ে যাবে দেশ। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের এই সময় থেকে বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক- অর্থনৈতিক- সাংস্কৃতিক মুক্তির ভিত স্থাপন করবে কে, কোন দল।

শতাব্দীর কিছু দাবী থাকে- এ শতাব্দীর অনেক দাবীর ভেতর অন্যতম হচ্ছে- শিক্ষা, স্বাধীনতা, সাম্য, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যতা, নারীমুক্তি প্রভৃতির সাথে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন। এসব দাবী যারা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করে জনগণের ভোট সে দিকই যাবে।

এই নিবন্ধের শিরনামে পক্ষপাত আছে। পক্ষপাত এই জন্য যে, নির্বাচন অবশ্যই জনগণকে দ্বিখ-িত করে দেবে। কারণ ইতিমধ্যে তারা বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভাগ হয়ে আছে। যেমন- বাঙালি > বাংলাদেশী স্বাধীনতার পক্ষ > বিপক্ষ , গণতন্ত্রী > মৌলবাদী।

আওয়ামী লীগ জয়ী হলে দেশে আজন্ম লালিত বাঙালি জাতিয়তাবাদী ধারাটি বজায় থাকবে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, তার অর্জন, তার প্রকৃত ইতিহাস আর বিকৃত হবেনা। বিকৃত ইতিহাস হবে সত্যে পূনরুজ্জীবন। গণতন্ত্রের উত্তরণে সোসালিস্ট ধারাটি বজায় থাকবে আর উন্নয়নের ধারাটি বজায় থাকবে।

বিএনপি সরকারে এলে তৈরী করা জাতীয়তাবাদী ধারাটি গোয়েবেলসিয় পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকবে। কারণ এপক্ষ বাংলাদেশী জাতিয়তা ও বাংলাদেশ জিন্দাবাদের ভেতর দ্বিজাতিতত্ত্বের একটি মৃত ছায়া দেখতে পায়। অনুভব করে পাকিস্তানি সম্মোহন, ৪৭-এর ধর্মভিত্তিক দেশ বিভাগের নব রূপান্তর। এরা এলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হবে নানাভাবে কলঙ্কিত কারণ মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি কলাবরেট দলগুলো তখন সরকারী ক্ষমতার অংশ নেবে। বিএনপি এলে গণতন্ত্রের ছদ্ম আবরণে মূলত প্রকট হয়ে উঠবে মৌলবাদ।

নির্বাচনে দল বা জোট তার চেতনাগত আইডিয়া নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।

বিএনপিকে এবার যেনতেন প্রকারে নির্বাচনে আসতে হবে। যদি কোন ইগোর কারণে না আসে তাহল আগামীতে তার জনভিত্তি মারাত্মক প্রশ্নের সš§ুখিন হবে। সুতরাং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ অথবা তার জোটের সাথে বিএনপি অথবা তার জোটের।

নির্বাচনে ভোট হচ্ছে মৌলিক ইউনিট। সুতরাং ভোটারই হচ্ছে ইউনিটের একমাত্র মালিক। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- শ্লোগানটি জনপ্রিয় কিন্তু কিছুটা স্বেচ্ছাচার আছে যাকে খুশি তাকের ভেতর। অতএব একজন ভোটার ভোট দেবার আগে অবশ্য লক্ষ্য রাখবেন তার ভোটটি যেন বাঙালি চেতনার স্বপক্ষে যায়। তার ভোট যেন কিছুতে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির হাতকে শক্তিশালি না করে। তার অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে তার ভোটপ্রদান যেন দেশের ভেতর মৌলবাদি শক্তির উত্থানকে সহায়তা না করে।

নির্বাচনে একেকটি দল তার চেতনাগত আইডিয়া নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে এই নির্বাচন একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের জন্য মাইলস্টোন হয়ে থাকবে এর ভেতর থেকে নির্ধারণ হয়ে যাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে আমরা কতটা শ্রদ্ধা করি। আমরা বাঙালি নাকি বাংলাদেশি, নির্ধারিত হবে আমাদের মনের ভেতর কতটুকু পাকিস্তান বাস করে।

সুতরাং সাবধান জনগণকেই হতে হবে। ইতিহাস বলে এদেশের জনগণ তার সংকট সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। আজ জাতির এই সংকট মুহূর্তেও জনগণের কাছ থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত অবশ্যই আসবে। সবকিছুর শেষ আশ্রয় জনগণ, অতএব জনগণ কোন ভুল করতে পারেনা-

জয় হোক জনতার।#পরিতোষ হালদার, কবি, উপন্যাসিক, লেখক।