দৃশ্যমান উন্নয়নে এগিয়ে পৌরসভা
হায়দার হোসেন: আসাদুজ্জামান খোকন। শূন্য থেকে সফলতার সিঁড়িতে উঠেছেন মাত্র। সামনে অনেক পথ। পাড়ি দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে খোকনের রয়েছে ঠিকাদারি, রড -সিমেন্ট, মোবাইল অপারেটরের এজেন্ট এবং ওয়ালটন, সিঙ্গার ইলেকট্রনিক পণ্য এবং টিভিএস মটরস এর ডিলার। নিজের পরিশ্রম এবং লোকজন খাটিয়ে চলমান আছেন খোকন। শুধু অর্থনৈতিক নয় সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত একজন লোক হিসেবে মুকসুদপুরে তার বেশ সুনাম আছে। তার শূন্য থেকে শুরু করার গল্প অনেকটা স্বাভাবিক নয়। বরং অস্বাভাবিকভাবেই নানান প্রতিকুলতার মধ্যে যুদ্ধ করেই তার বেড়ে উঠা। এই বেড়ে উঠার পরে নিজ দেশসহ ঘুরেছেন নেপাল, শ্রীলংকা, ভুটান, অংশ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে পৌরবাসী। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুহাম্মদ ফারুক খান এমপির হস্তক্ষেপে ২০১৭ সালে পৌর সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড.আতিকুর রহমান মিয়া দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরেই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৫টি গ্রামের ১১টি মৌজায় প্রায় ২৫ হাজার লোকের উন্নত সেবা প্রদানে এবং উন্নত জীবন ও উন্নত পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথমে পৌরভবন স্থানান্তর ও দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করেন। এছাড়াও রাস্তাঘাট ব্রিজ, কালভার্টসহ নানামুখী উন্নয়ন হয়েছে। পৌরসভার উন্নয়নের মধ্যে চোঁখে পড়ার মতো উন্নয়ন হলো বহুল কাক্সিক্ষত কমলাপুর ব্রিজ নির্মাণ, কমলাপুর আগারীর ব্রিজ নির্মাণ, সদর বাজারে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেন নির্মাণসহ পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের প্রতিটি গ্রামে পাকা সড়ক, সোলার লাইট, সোলার ষ্ট্রিট লাইট ইত্যাদি।
মুকসুদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এ্যাড.আতিকুর রহমান মিয়া জানান, ২০১৭ সালে আমি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অবহেলিত পৌরসভার উন্নয়নের দিকে নজর দেই। নির্বাচনের আগে পৌরবাসীকে দেয়াওয়াদা ওয়াদা রক্ষা করেছি। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র অর্থায়নে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মুকসুদপুর পৌর ভবন উদ্বোধন করা হয়। তিনি আরো জানান, তার আমলে ৪৫টি প্রকল্পে ১৩২ কোটি ৪৯লাখ ৯২হাজার টাকার উন্নয়ন হয়েছে
পৌরসভাবাসীদের সুপেয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের আওতায় পানি সরবরাহ ও মানববর্জ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সম্মত স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে ২২ কোটি টাকার বেশী ব্যয় করে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরে পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের পানীয় জলের সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হলো। শুধু বিশুদ্ধ পানীয় জলের সমস্যা সমাধান হবে না, হবে সুষ্ঠ মানববর্জ ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সম্মত স্যানেটেশন ব্যবস্থার একটি রোল মডেল।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আনোয়ার হোসেন জানান, আমি ২৩ বছর ধরে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করে আসছি। বিএনপির আমলে পৌরসভার কোন উন্নয়ন হয়নি। পৌরসভার জন্য কোন বরাদ্দই ছিলনা। পৌরসভার যে আয় ছিল তাই দিয়ে টুকটাক কাজ করা হয়েছে। টানা ৩ বার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পৌরসভার উন্নয়ন হয়েছে। পৌরসভার এখন এমন অবস্থা যে বাজেট আছে কিন্তু কাজ করার যায়গা নেই। পৌরসভার প্রতিটি রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট করা হয়েছে। পৌরবাসীর সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পৌরবাসীর যাবতীয় ডিজিটালাইজড সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। সুতরাং বলাই যায়, দেশের পৌরসভাগুলোর মধ্যে মুকসুদপুর পৌরসভা উন্নয়নের রোল মডেল।
বিগত নির্বাচনে বিজয়ী পৌর মেয়র আশরাফুল আলম শিমুল দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্যানেল মেয়র এ বিষয়ে বক্তব্য দেননি।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিউল আলম শিকদার মুকসুদপুর পৌর এলাকার উন্নয়ন নিয়ে মুকসুদপুর সংবাদের সাথে আলাপকালে বলেন গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে তা ব্যাপক ও স্থায়ী উন্নয়ন। আমাদের নেতা মুহাম্মদ ফারুক খান এমপির আন্তরিক চেষ্টায় বহুল প্রত্যাশিত দৃষ্টিনন্দন পৌর ভবন, মডেল মসজিদ, শেখ রাসেল মিনি ষ্টেডিয়াম, সুপেয় সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে, রাস্তায় সোলার লাইট স্থাপিত হয়েছে, খাল ও নদী খনন করে দেয়া হয়েছে, প্রয়োজনীয় সকল রাস্তা পাকা হয়েছে। পৌরবাসী আজ উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করছে। সকলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। এটা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন আছে। এজন্য এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান নিজেদের মধ্যে একতা গড়ে তুলে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবারও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
গোপালগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন সারা দেশের ন্যায় মুকসুদপুর পৌরসভারও সুষম উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামবান্ধব সরকার গ্রামের শান্ত পরিবেশকে জীবন যাপনের জন্য অগ্রধিকার দিচ্ছেন। সামগ্রিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে শহর গ্রামের পার্থক্য কার্যত মুছতে শুরু করেছে। এতে করে ধরেই নেয়া যায় সারা দেশের সাথে তাল মিলিয়ে পৌরবাসী আগামীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্রোতে শরিক হচ্ছেন।



Admin
