নির্বাচনী মাঠে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ফারুক খান

নির্বাচনী মাঠে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ফারুক খান

হায়দার হোসেন: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জ-১ আসন  (মুকসুদপুর-কাশিয়ানী)  আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম মেম্বার ও গত একটানা ৫ মেয়াদের এমপি মুহাম্মদ ফারুক খান। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় ভোট ব্যাংক এবং জনপ্রিয়তায় সর্বস্তরের মানুষের কাছে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মুহাম্মদ ফারুক খানকে এগিয়ে রাখছে সাধারণ ভোটাররা। পাশাপাশি তাঁর রয়েছে নিজস্ব বিশাল একটি ভোট ব্যাংক।

১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সকল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, মুহাম্মদ ফারুক খান এর জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সেই জনপ্রিয়তার কারণে এবারও দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তে ৬ষ্ঠ বারের মত ধারাবাহিকভাবে দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছে।

১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ৭ম সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-১ আসনে মোট ভোটার ছিল ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩ শ ৫০। ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী’র দাড়িপাল্লা প্রতীকে ৫ হাজার ২শ ৩৬ ভোট পেয়েছিলেন। অপরদেকে নৌকা প্রতীকে মুহাম্মদ ফারুক খান ১ লাখ ১৯ হাজার ৫শ ৩৬ ভোটে প্রথম জয় যুক্ত হন। ওই সময় ভোটের ব্যবধান ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৩শ ভোট।

২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম সংসদ নির্বাচনে মুহাম্মদ ফারুক খান নৌকা মার্কায় পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩শ ৯১ ভোট। অপরদিকে ওই সময়ের হেভিওয়েট বিএনপি প্রার্থী মহব্বত জান চৌধুরী পেয়েছিলেন ২০ হাজার ১শ ৩৬ ভোট।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত ৯ম সংসদ নির্বাচনে ২ লাখ ৪২ হাজার ১শ ৫২ মোট ভোটার এর মধ্যে মুহাম্মদ  ফারুক খান পেয়েছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ২শ ৩৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র সেলিমুজ্জামান মোল্যা পেয়েছিলেন ৯ হাজার ৯শ ৮৬ ভোট।

২০১৪ সালে ১০ম সংসদ নির্বাচনে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৫শ ৭৬ ভোটের মধ্যে মুহাম্মদ ফারুক খান আওয়ামী লীগ প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৪০ হাজার ৩শ ৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির দীপা মজুমদার পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৮শ ৬৩ ভোট।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১শ ৩০ ভোট, আর ছিল ৪ প্রার্থী। সেখানে নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছিল ৩ লাখ ৩ হাজার ১ শ ৬২ আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী (হাতপাখা) মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান  পেয়েছিলেন ৭শ ০২ ভোট। 

এবারে মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী এলাকায় ১ পৌরসভা ২৩ ইউনিয়নে মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৮টি। মোট ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫শ ৯০ ভোটার রয়েছেন। দু উপজেলার নেতা কর্মীদের দাবি এবারও অতীতের ইতিহাসের সাথে মিল রেখে ভোট প্রািিপ্ততে নতুন ইতিহাস গড়বেন।

‘মুহাম্মদ ফারুক খান একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি বিগত ২৫ বছর সংসদ সদস্য থেকে সামাজিক ও বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মকা-ের সাথে যুক্ত হয়ে মানুষের জন্য সহায়তায় তাঁর হাত ছিল প্রসারিত, যার ফলে তাঁর রয়েছে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষের কাছে বাড়তি জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাধারণ জনগণÑ এমন মন্তব্য করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম শিকদার।

মুকসুদপুর আওয়ামী লীগ সহসভাপতি হুজ্জাত হোসেন লিটু বলেন সম্প্রতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারা মুকসুদপুরে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। সেই হাওয়ায় কার কতটুক জনপ্রিয়তা তা সকলের মুখে মুখে। মোট প্রার্থী ৬ জন। এর মধ্যে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা রয়েছে ফারুক খানের। গত ১৫ বছরে মুকসুদপুরে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন হয়েছে তা ফারুক খানের হাত ধরেই। বাংলাদেশে যত রাজনীতিক রয়েছেন তার মধ্যে সেরা রাজনীতিকদের মধ্যে ফারুক খান অন্যতম। তিনি সার্বক্ষণিক রাজনীতি নিয়েই থাকেন। প্রতি মাসে একবার দুবার এলাকায় আসলেও প্রতিদিনই  এলাকার লোকের কথা শুনেন, তাদের সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর মতো উদারপ্রাণ মানুষ হয় না। তাঁর কাছে ধনী, গরীব কোন ভেদাভেদ নেই। সব ধর্মের মানুষ তাঁর কাছে নিরাপদ।

কৃষি সম্পাদক জহির হাসান টিটো বলেন উপজেলার ২৯টি হাঁট বাজারের আধুনিকায়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সোলার লাইট স্থাপন করা হয়েছে। এতে সারা মুকসুদপুর কাশিয়ানি সন্ধ্যা হলেই আলোকিত হয়ে উঠে। এছাড়া সকল অফিস নিয়ে উপজেলা পরিষদ সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করায় একই ভবনে প্রশাসনিক কার্যক্রম ছাড়াও জনতাকে সেবা দেওয়া সহজ হচ্ছে।

মুকসুদপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ মিনা জানান সড়ক ও জনপথের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ৫৫ কিলোমিটারসহ সারা মুকসুদপুরে উপজেলা সড়ক ১৪টি, ইউনিয়ন সড়ক ২৯টি এবং গ্রামীণ ৬শ ৬৩ সড়ক পাকাকরণ যার দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬১ কিলোমিটার। কুমার নদ, এমবিআর চ্যানেল ও ছোট-বড় খালের উপর নির্মিত সেতু কালভার্ট ৬শ ২৭টি।  মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহার সেমিপাকা ঘর পেয়েছেন ৬শ ৬৩ পরিবার ১শ ৬২ টি বীর নিবাস করে দেয়া হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য পাকা ঘর করে দেয়া হয়েছে। তারা সেখানে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করছে। ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সড়কে মুকসুদপুর-কাশিয়ানী অংশে ২২ কিলোমিটার রেল সড়ক স্থাপন

অপর সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান পল্টু জানান মুকসুদপুর উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন ১ হাজার ৫শ জন, ১৭ হাজার ৯শ ৯জন বয়স্ক ভাতা, ৮ হাজার ৫শ ৬৮ জন বিধবা ভাতা, ৬ হাজার ৩শ ২ জন প্রতিবন্ধী ভাতা, ৪ হাজার ২শ ২ জন মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং ৩০ কেজি করে প্রতিমাসে পুষ্টি চাল পাচ্ছে ২ হাজার ২শ ৮৫ জন নারী।

উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সরদার মজিবুর রহমান বলেন ‘মুকসুদপুর উপজেলার ১টি পৌরসভা ১৬টি ইউনিয়নের ২শ ৭৮ গ্রামে শতভাগ বিদ্যুতায়ন (মোট বিদ্যুৎ গ্রাহক ১ লাখ ১২ হাজার ) এছাড়া ১শ শয্যার একটি উপজেলা হাসপাতাল, ১৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, ৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য ৪টি কলেজে সর্বাধুনিক ভবন নির্মাণসহ মোট ২শ ৭৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক শিক্ষার পরিবেশ এবং ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী পাচ্ছে মোবাইলের মাধ্যমে শিক্ষা উপবৃত্তি ।

মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, যেহেতু ইতিপূর্বে একাধিকবার নির্বাচন করেছি। আওয়ামী লীগের পক্ষে মাঠে ময়দানে নির্বাচনী প্রচারণা করেছি। আমি শুধুমাত্র নির্বাচনকে ঘিরে নয় সব সময় জনগণের পাশে আছি এবং থাকব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের যে স্বপ্ন দেখেন। আমি সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। আমার দায়িত্ব নির্বাচনী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানউন্নয়ন করা। কতটা করতে পেরেছি সেটা দৃশ্যমান। উন্নয়ন যেহেতু চলমান সেটা চলতেই থাকবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়নসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছি। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে দোয়া এবং আর্শীবাদ ও ভোট প্রার্থনা করেছেন।